তদ্ধিত শব্দের আক্ষরিক অর্থ‒তাহার জন্য হিতকর। কিন্তু ব্যাকরণে এটি একটি প্রত্যয় হিসাবে ব্যবহৃত হয়। এই কারণে, এর পূর্ণাঙ্গ নাম -তদ্ধিত প্রত্যয়।
বাংলা ব্যাকরণে পাঁচটি প্রত্যয়ের একটি হলো তদ্ধিত প্রত্যয়। যে প্রত্যয় শব্দমূলের শেষে যুক্ত হয়ে নূতন শব্দ তৈরি করে, তাকে তদ্ধিত-প্রত্যয় বলে। বিদ্যাসাগর প্রণীত ব্যাকরণ কৌমুদী এর ইংরেজি সমার্থ শব্দ হিসাবে বলা হয়েছে-secondery suffix ।
বাংলা ভাষায় যে সকল শব্দ তদ্ধিত প্রত্যয় যোগে তৈরি হয়। তাকে তিনটি শ্রেণিতে ভাগ করা হয়। এই ভাগ তিনটি হলো‒
সংস্কৃত তদ্ধিত প্রত্যয়
দেশী তদ্ধিত প্রত্যয়
সংস্কৃত তদ্ধিত প্রত্যয়
বাংলা ভাষায় বহু শব্দ সংস্কৃত থেকে সরসারি প্রবেশ করেছে। এই সকল শব্দের কোনটি সংস্কৃত বানানরীতি অনুসারেই বাংলাতে পাওয়া যায়। যেমন‒ কায়। আবার কিছু শব্দ বাংলা বানানরীতি দ্বারা পরিবর্তি হয়ে ব্যবহৃত হয়। যেমন‒ সংস্কৃত সূর্য্য> বাংলা সূর্য। এই প্রভেদটুকু ধরে নিয়েই এসব শব্দকে সংস্কৃত শব্দ হিসেবেই বিবেচনা করা হয়। এই সকল শব্দের ভিতর একটি বড় অংশ তদ্ধিত প্রত্যয় দ্বারা সাধিত হয়।
সংস্কৃত সকল ধরনের শব্দ বাংলাতে ব্যবহৃত হয় না। সেই বিচারে বাংলা ভাষায় ব্যবহৃত সংস্কৃত তদ্ধিত প্রত্যয়ের সবগুলো আলোচনার প্রয়োজন পড়ে। বাংলা ব্যাকরণে সংস্কৃত তদ্ধিত প্রত্যয় হলো নৈর্বাচনিক। অর্থাৎ যে সকল সংস্কৃত বাংলা ভাষায় প্রবেশ করেছে, সে সকল শব্দের প্রত্যয় দ্বারা সাধিত হয়, সেগুলোই হলো সংস্কৃত তদ্ধিত প্রত্যয়। একে আরও স্পষ্ট কর বললে, বলা উচিৎ 'বাংলা ভাষায় ব্যবহৃত সংস্কৃত তদ্ধিত প্রত্যয়'। নিচে এই জাতীয় প্রত্যয়ের তালিকা দেওয়া হলো।