স্বতন্ত্র অস্তিত্ব আছে এমন অনু ভূত (ইন্দ্রিয়গ্রাহ্য) বা জ্ঞাত বা সিদ্ধান্তকৃত এমন কিছু।
ঊর্ধ্বক্রমবাচকতা {সত্তা}
ইংরেজি: entity
ব্যাখ্যা:
মানুষ যত ধরনের বিষয়বস্তুকে পৃথকভাবে শনাক্ত করতে পারে, তা এক বা একাধিক শব্দ দ্বারা প্রকাশ করে। এই প্রকাশযোগ্য শব্দ বা শব্দসমূহের সাধারণ পরিচিতি হলো 'নাম'। আবার 'নাম' রয়েছে এমন যে কোনো বিষয়বস্তুকে পদপ্রকরণের বিচারে 'বিশেষ্য' হিসেবে বিবেচনা করা হয়।
নামযুক্ত বিষয়বস্তু কিছু গুণ ধারণ করে। যেমন- পানি বেশি তাপে বাষ্পীভূত হয়, পৃথিবীর গড় তাপমাত্রায় তরল থাকে, বেশি ঠাণ্ডায় জমে যায়। এবং বহু দ্রব্যকে দ্রবীভূত করে, আগুনকে নিভিয়ে ফেলে ইত্যাদি। এরূপ নানা ধরনের ভৌত ও রাসায়নিক গুণের বিচারে পানি অন্যান্য বিষয়বস্তু থেকে আলাদা হয়ে যায়। যদি কোনো বিষয়বস্তুর সকল গুণকে একটি সাধারণ সেটের অন্তর্ভুক্ত করা যায়, তা হলে ওই বিষয়বস্তুর একটি ধর্ম প্রকাশ পায়। যেমন- পানির ধর্ম, আগুনের ধর্ম, বাতাসের ধর্ম ইত্যাদি। এই ভাবে প্রতিটি বিষয়বস্তু তারা ধর্ম দ্বারা নিজেকে অন্য সকল বস্তু থেকে পৃথকভাবে অস্তিত্ব প্রকাশ করে। একটি বিষয়বস্তুর ধর্মটা কিভাবে অন্যের কাছে প্রকাশিত হয়, তার উপর নির্ভর করে সত্তার ধর্ম প্রকাশিত হয়। ধরা যাক, সূর্যের একটি বিশেষ গুণ আলো দেওয়া। এই গুণ অন্ধলোকের কাছে ধরা পড়ে না। এই ভাবে একটি বিষয়বস্তুর সকল ধর্ম সবার কাছে সমানভাবে প্রকাশ পায় না। একটি বিষয়বস্তুর গুণাবলি যতভাবে প্রকাশিত হতে পারে, তা হবে ওই বিষয়বস্তুর পরমধর্ম। কোনো বিশেষ মানুষের বোধবুদ্ধির বিচারে কোনো বিষয়বস্তুর ধর্মকে যদি বিবেচনা আনা যায়, তাহলে তা হবে বিষয়বস্তুর আংশিক ধর্ম। আর যদি মনুষ্যজাতির গড় বোধবুদ্ধির বিচারে কোনো বিষয়বস্তুর ধর্মকে বিচার করা হলে, তা হবে মনুষ্য গড় ভাবনার বিচারেও আংশিক ধর্ম। মানুষের এই গড় বোধবুদ্ধির বিচারেই বিষয়বস্তুর ধর্মকে বিবেচনা করা হয়। এই গড় বিবেচনার সূত্রে দ্বারা মানুষের কাছে প্রতিটি বিষয়বস্তু যে বৈশিষ্ট্যে ধরা পড়ে, তা হলো সত্তা ধর্ম।
মানুষ যত ধরনের সত্তাকে শনাক্ত করতে পারে, তাকে সত্তা-ধর্মের বিচারে তিনটি ভাগে ভাগ করা যায়। এই ভাগগুলো হলো—
মূর্ত সত্তা বা দৈহিক সত্তা [ Physical entity ] দৈহিক অস্তিত্ব আছে এমন সত্তা।
বিমূর্ত সত্তা [ Abstract entity ] শুধু বিমূর্তরূপে বর্তমান এমন একটি সত্তা।
অনামী সত্তা [ thing ] সুনির্দিষ্ট নামে চিহ্নিত হয় নাই এমন সত্তা।